কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী দুই পক্ষের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে আহত ৫
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলায় বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী দুই নেতার সমর্থকদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) রাত ৮টার দিকে উপজেলার রায়গঞ্জ ইউনিয়নে এ সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত পাঁচজন গুরুতর আহত হন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, কুড়িগ্রাম-১ আসনের বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী সাবেক জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব সাইফুর রহমান রানা ও তরুণ নেতা ডা. ইউনুছের সমর্থকদের মধ্যে এ সংঘর্ষ হয়।
অভিযোগ রয়েছে, সাইফুর রহমান রানার সমর্থক ও যুবদল থেকে পদত্যাগ করে জাতীয় পার্টিতে যোগ দেওয়া রায়গঞ্জ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. আরিফুজ্জামান দিপ মণ্ডল (৪৫) এই সংঘর্ষে নেতৃত্ব দেন। তার সঙ্গে ছিলেন বাজি মণ্ডল (৩৮), মুরাদ মণ্ডল (৪৩), বক্তার আলী মণ্ডল(৪৯), গোলজার আলী মণ্ডল (৬০), লাভলু মণ্ডল (৪০), রাজীব মণ্ডল (৩৫)সহ অজ্ঞাত ২০-২৫ জন অস্ত্রধারী।
অন্যদিকে, ডা. ইউনুছপন্থী বিএনপি নেতা মো. মজিবর মণ্ডলের সঙ্গে ছিলেন রায়গঞ্জ ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আরিফ, বিপ্লব মিয়া, যুবদল নেতা রবিউল ইসলআম।
ঘটনার সূত্রপাত ২২ সেপ্টেম্বরের এক জনসভা থেকে। ওই দিন চেয়ারম্যান আরিফুজ্জামান দিপ স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে নিয়ে সাইফুর রহমান রানার জনসভায় যোগ দেন। বিষয়টি নিয়ে বি এন পি নেতাদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দেয় । পরে আওয়ামী লীগ নেতা রিয়াজ উদ্দিন বিষয়টি চেয়ারম্যানকে অবহিত করেন।
এরপর ২ অক্টোবর সন্ধ্যায় চেয়ারম্যান আরিফুজ্জামান দিপ ও রিয়াজ উদ্দিনসহ কয়েকজন জেলা বি এন পি র সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাইফুর রহমান রানার নাগেশ্বরী বাসায় বৈঠক করেন। বৈঠকের কিছু পরেই রাতে রায়গঞ্জ বাজারে ছাত্রদল নেতা রবিউল ইসলাম রনি ও খাইরুল ইসলাম অবস্থান করাকালে আরিফুজ্জামান দিপ ও তার সহযোগীরা অর্তকিত হামলা চালান। দেশীয় অস্ত্র দিয়ে মারধরের পর তাদের চেয়ারম্যানের বাড়িতে আটক করে রাখার অভিযোগ ওঠে।
পরিবারের সদস্যরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গেলে আবারও হামলা হয়। এসময় চেয়ারম্যান আরিফুজ্জামান দিপের হাতে থাকা রামদার আঘাতে মো. আরিফ সরকারের (৩০) ডান পায়ের রগ কেটে যায়। তাকে রক্ষা করতে গেলে মজিবর রহমান সরকার (৬৭) ও জাকির হোসেন ফজুর (৫০) মাথায় ধারালো অস্ত্রের আঘাতে গুরুতর জখম হন।
আহতদের মধ্যে রয়েছেন—মো. মজিবর রহমান (৬৭), ছাত্রদল নেতা মো. আরিফ (২৫), সাবেক ছাত্রদল নেতা খায়রুল (৩২), যুবদল নেতা রবিউল ইসলাম রনি (৩৪) ও মো. জাকির হোসেন ফজু (৫০)।
বাজারের লোকজন দ্রুত এগিয়ে এসে আহতদের উদ্ধার করে নাগেশ্বরী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। কর্তব্যরত চিকিৎসক তিনজনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং অন্য দুইজনকে কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে পাঠান।
নাগেশ্বরী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. রেজাউল করিম রেজা বলেন,
“ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন। মামলা হলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”