রাজধানীতে আলিফ পরিবহনের বাসে আগুন: চাঁদাবাজি নাকি ছাঁটাইকৃত কর্মীদের প্রতিশোধ?
স্টাফ রিপোর্টার
তথ্য বলছে, শুক্রবার (৩ অক্টোবর) সকাল ৭টার দিকে রাজধানীর মিরপুরের সেনপাড়া এলাকায় আলিফ পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাসে দুর্বৃত্তরা হামলা চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়।
বাসচালকের বর্ণনা অনুযায়ী, কয়েকজন ব্যক্তি হাত ইশারা করে বাস থামাতে বলেন। থামানোর পর চালক ও সহকারীকে মারধর করে নামিয়ে দেওয়া হয়। আতঙ্কিত যাত্রীরা দ্রুত বাস ছেড়ে নেমে যান। ভুক্তভোগীদের দাবি, এরপর দুর্বৃত্তরা বাসের সামনের গ্লাস লক্ষ্য করে কয়েক রাউন্ড গুলি চালায় এবং মুহূর্তেই আগুন ধরিয়ে দেয়।
সূত্র জানায়, এর আগেও পরিবহনটির ওপর চাঁদাবাজির চাপ ছিল। বাস কর্তৃপক্ষের দাবি, নেছার নামে এক ব্যক্তি চাঁদার দাবিতে কয়েকদিন আগে তাদের স্টাফদের জখম করেছিলেন। অভিযোগ উঠছে, এই ঘটনার সঙ্গেও তার সংশ্লিষ্টতা থাকতে পারে।
বাস কোম্পানির কর্মকর্তাদের ভাষ্য, “চাঁদা না দেওয়ায় এর আগেও আমাদের স্টাফদের ওপর হামলা হয়েছে। এবার সেই ধারাবাহিকতায় বাসে আগুন দেওয়া হয়েছে।
মিরপুর বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ মাকছুদুর রহমান বলেন—
“সম্প্রতি আলিফ পরিবহন থেকে কয়েকজন কর্মী ছাঁটাই করা হয়। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ক্ষুব্ধ হয়ে ওই কর্মীদের একটি অংশ এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে। তবে তদন্ত শেষ হলে প্রকৃত কারণ জানা যাবে।”
অর্থাৎ, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে ঘটনাটি এখনো রহস্যঘেরা। চাঁদাবাজির অভিযোগ ও ছাঁটাইকৃত কর্মীদের প্রতিশোধ—দুই দিকই তদন্তে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
যাত্রীদের একজন বলেন, “হঠাৎ করেই গুলি ছোড়া হয়, সবাই আতঙ্কে দৌড়ে পালাই। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই বাসে আগুন ধরে যায়। ভাগ্য ভালো, দ্রুত নেমে আসতে পেরেছিলাম।”
অন্য এক যাত্রীর অভিযোগ, “রাজধানীতে প্রতিদিন পরিবহনে উঠি, কিন্তু নিরাপত্তার নিশ্চয়তা পাই না। আজ বেঁচে গেছি, কাল আবার কী হবে সেই ভয় রয়ে গেল।
রাজধানীর ব্যস্ত এলাকায় দিনের আলোয় গুলি ও অগ্নিসংযোগের মতো ঘটনা ঘটলো কীভাবে? গণপরিবহনে যাত্রীদের নিরাপত্তা কোথায়?
এটি কি কেবল চাঁদাবাজির ঘটনা, নাকি পরিবহন খাতের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের প্রতিশোধ?
তথ্য বলছে, রাজধানীর গণপরিবহন খাতে নিরাপত্তার ঘাটতি বহুদিনের। চাঁদাবাজ চক্র, শ্রমিক অসন্তোষ এবং ছাঁটাইকৃত কর্মীদের ক্ষোভ—এই তিনটি দিকই এখন তদন্তের আওতায়।
সূত্র জানায়, তদন্তের পরই ঘটনার আসল রহস্য উদঘাটিত হবে। তবে ততদিন পর্যন্ত যাত্রীদের আতঙ্ক ও অনিশ্চয়তা থেকেই যাচ্ছে।