খুলনায় নেশার টাকা না পেয়ে পিতাকে হত্যা: অভিযোগ ছেলের বিরুদ্ধে, জড়িত স্ত্রীও
খুলনা প্রতিনিধি আব্দুল্লাহ
তথ্য বলছে, খুলনা নগরীর বসুপাড়া বাঁশতলায় বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) রাত সাড়ে ১০টার দিকে মর্মান্তিক এক হত্যাকাণ্ড ঘটে। নেশার টাকা না পেয়ে পিতাকে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে আবু বকর লিমন (১৭) নামের এক কিশোরের বিরুদ্ধে। নিহত ব্যক্তি লিটন খান (৪৫) পেশায় মাছ বিক্রেতা ছিলেন।
সূত্র জানায়, সম্প্রতি লিটন খান একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে ৫০ হাজার টাকা ঋণ নেন। অভিযোগ অনুযায়ী, লিমন ওই টাকা থেকে ২০ হাজার টাকা দাবি করছিলো। কিন্তু নেশাগ্রস্ত ছেলেকে টাকা দিতে রাজি হননি লিটন খান। এ নিয়েই বাড়িতে কলহ বেড়ে যায়।
পুলিশ বলছে, বৃহস্পতিবার রাতে লিমনের স্ত্রী চাঁদনীও হত্যার পরিকল্পনায় সরাসরি জড়িত ছিলেন। বাড়িতে একা থাকার সুযোগে প্রথমে শ্বাসরোধ করা হয় লিটন খানকে, পরে ধারালো বটি দিয়ে গলা কেটে মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়।
প্রতিবেশীদের দাবি, লিমন দীর্ঘদিন ধরে নেশায় আসক্ত এবং প্রায়ই পরিবারের ওপর চড়াও হতো। একজন প্রতিবেশী জানান—
“লিমন টাকা না পেলে প্রায়ই বাবাকে মারধর করতো। আমরা কয়েকবার দেখেছি। কিন্তু বাবাকে যে শেষ পর্যন্ত মেরে ফেলবে, তা ভাবতেই পারছি না।”
আরেকজন বলেন—
“লিটন খুব পরিশ্রমী মানুষ ছিলেন, মাছ বিক্রি করে সংসার চালাতেন। কিন্তু ছেলের নেশার টাকা জোগাড় করতে না পারায় তাঁকে প্রাণ দিতে হলো।
সোনাডাঙ্গা মডেল থানার ওসি কবির হোসেন বলেন—
“নিহতের ছেলে আবু বকর লিমন ও তার স্ত্রী চাঁদনী হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে সরাসরি জড়িত। তারা ঘটনার পর পালিয়ে যায়। অভিযুক্তদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।
কিশোর বয়সেই নেশায় আসক্ত হয়ে লিমনের মতো তরুণরা কেন এতটা সহিংস হয়ে উঠছে?
পারিবারিক সুরক্ষা ও সচেতনতা কোথায় ব্যর্থ হলো?
মাদক নিয়ন্ত্রণে আইন প্রয়োগের পাশাপাশি সামাজিক উদ্যোগ কতটা কার্যকর হচ্ছে?
তথ্য বলছে, নেশার কারণে পারিবারিক সম্পর্ক ধ্বংসের পাশাপাশি ভয়াবহ অপরাধও ঘটছে। মাদকাসক্তি শুধু ব্যক্তিকেই নয়, পরিবার ও সমাজকেও বিপদের মুখে ঠেলে দিচ্ছে। সূত্র জানায়, অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে আইনি প্রক্রিয়া শুরু করা হবে। তবে প্রশ্ন থেকেই যায়—মাদকের ভয়াবহ ছোবল থেকে তরুণ সমাজকে রক্ষা করার কার্যকর সমাধান কবে আসবে?