কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অব্যবস্থাপনা, জেলা প্রশাসকের নজরে একের পর এক অসংগতি
তিমির বনিক, মৌলভীবাজার
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগীসেবা ও প্রশাসনিক কাজে একাধিক অনিয়ম ও ত্রুটি ধরা পড়েছে। সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) আকস্মিক পরিদর্শনে গিয়ে এসব অসংগতির সন্ধান পান জেলা প্রশাসক মো. ইসরাইল হোসেন।
পরিদর্শনে দেখা যায়, রোগীদের জন্য সরকারি খাদ্য মেনুতে ভাত, মাংস, ডাল ও সবজি থাকার কথা থাকলেও বাস্তবে সবজি পরিবেশন করা হয়নি।
দন্ত চিকিৎসকের চেম্বারে রোগীর ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি অপরিচ্ছন্ন অবস্থায় পড়ে ছিল, যা রোগীদের সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ায়।
এছাড়া পোস্ট অপারেটিভ কক্ষে পর্যাপ্ত সুরক্ষা ব্যবস্থা নেই। নিয়ম অনুযায়ী সংক্রমণ রোধে দরজা সর্বদা বন্ধ রাখার কথা থাকলেও সেটি মানা হয়নি।
এসব অনিয়মের প্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসক একাধিক নির্দেশনা দেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাকে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
খাবারের মেনুতে সবজি বাদ দেওয়ার কারণ জানতে ঠিকাদারকে তিন দিনের মধ্যে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।
সাত দিনের মধ্যে হাসপাতাল ভবন ও ক্যাম্পাস পরিষ্কার করে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
চিকিৎসক ও নার্সদের রোগীদের সাথে ভালো ব্যবহার ও সেবার মান উন্নত করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয়দের প্রশ্ন—সরকারি বরাদ্দ অনুযায়ী খাদ্য ও চিকিৎসাসেবা পাওয়ার কথা রোগীদের। কিন্তু মাঠপর্যায়ে সেই সেবা কেন বাস্তবায়ন হচ্ছে না?
জনস্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য যেখানে সংক্রমণ প্রতিরোধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার কথা, সেখানে এমন উদাসীনতার দায়ভার কে নেবে—হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নাকি সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার?
সূত্র জানায়, কমলগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দীর্ঘদিন ধরেই সেবার মান ও ব্যবস্থাপনা নিয়ে রোগী ও স্বজনদের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে। চিকিৎসা নিতে আসা অনেকেই অভিযোগ করেছেন—যথাযথ সেবা না পাওয়ার পাশাপাশি খাবার ও পরিবেশ নিয়েও ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপের পর দ্রুত কিছু ব্যবস্থা নেওয়া হলেও স্থানীয়দের মতে, টেকসই সংস্কার ও জবাবদিহিতা ছাড়া এ অনিয়ম আবার ফিরে আসবে। কমলগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এই পরিস্থিতি দেশের অন্যান্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বাস্তবতাকেও সামনে নিয়ে আসছে।