পরিবারের আকুতি আছিয়াকে বাঁচান
ব্রেইন ক্যান্সারে লড়ছে দেড় বছরের আছিয়া — পরিবারের আকুতি: আছিয়াকে বাঁচান
ভালুকা (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি: হাবিব জিহাদী
ময়মনসিংহের ভালুকার পাড়াগাঁও বড়চালা গ্রামের দেড় বছরের শিশু আছিয়া আক্তার খেলায় মগ্ন হলেও ভিতরে ভিতরে লড়ছে মরণব্যাধি ব্রেইন ক্যান্সারের সঙ্গে। নিষ্পাপ মুখের আড়ালে লুকিয়ে আছে অসহ্য যন্ত্রণা, আর পরিবারটি দাঁড়িয়ে আছে চরম অসহায়তার দেয়ালে।
প্রায় এক বছর আগে হঠাৎ জ্বরে আক্রান্ত হয় আছিয়া। স্থানীয় চিকিৎসকেরা টাইফয়েড শনাক্ত করে ভর্তি করান ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
সেখানেই প্রথম চোখে টিউমার ধরা পড়ে। পরবর্তীতে জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও ইসলামিয়া চক্ষু হাসপাতালে চিকিৎসা করানো হয়। তথ্য বলছে, টিউমার চোখ থেকে ছড়িয়ে গিয়ে ব্রেইনে প্রবেশ করেছে এবং তা ক্যান্সারে রূপ নিয়েছে।
শিশুটির বাবা জালাল উদ্দিন একজন দিনমজুর। ধারদেনা করে এতদিন মেয়ের চিকিৎসা চালিয়ে গেলেও এখন তিনি পুরোপুরি অক্ষম হয়ে পড়েছেন। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন আছিয়াকে বাঁচাতে জরুরি দুটি অপারেশন প্রয়োজন।
প্রতিটি কেমোথেরাপির খরচ ২৫ হাজার টাকা, যা ধার করে একাধিকবার করানো হলেও বর্তমানে চিকিৎসা বন্ধ হয়ে আছে।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে জালাল উদ্দিন বলেন—মেয়েটার চোখের টিউমার প্রথমে বুঝতে পারিনি। ডাক্তাররা বললেন ব্রেইনে ছড়িয়ে গেছে। আমি দিনমজুর মানুষ, এত টাকা কোথায় পাবো? সমাজের দয়ালু মানুষদের কাছে সাহায্য চাই—আমার মেয়েটাকে বাঁচাতে চাই।
মা সাবিনা আক্তারও আকুতি জানিয়ে বলেন—আমার দেড় বছরের মেয়েটা যদি একটু সহায়তা পায়, তাহলে হয়তো বাঁচবে। আমি তাকে হারাতে চাই না।
আছিয়া তিন সন্তানের মধ্যে কনিষ্ঠ। বড় ভাই এখনো অপ্রাপ্তবয়স্ক, সংসারের হাল ধরার মতো অবস্থায় নেই।
স্থানীয় মানুষজন ও স্বেচ্ছাসেবীরা সহযোগিতা করলেও প্রয়োজনীয় অর্থ জোগাড় হয়নি।
সূত্র জানায়, পরিবারটি এখন সমাজের বিত্তবান, প্রবাসী ও মানবিক সহায়তাকারীদের দিকে চেয়ে আছে।
প্রশ্ন উঠছে, দেশে প্রতি বছর অসংখ্য শিশু ক্যান্সারে আক্রান্ত হলেও কার্যকর শিশু-ক্যান্সার তহবিল বা সরকারি বিশেষ সহায়তা এখনো কতটা সহজলভ্য?
তথ্য বলছে, দারিদ্র্যের কারণে চিকিৎসা ব্যাহত হওয়া শিশুদের সংখ্যা গ্রামীণ এলাকায় আশঙ্কাজনকভাবে বেশি।
আছিয়ার মতো অনেক শিশু হয়তো একটু অর্থের অভাবে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে।
মাত্র দেড় বছরের আছিয়া আজ মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছে। সামান্য সহায়তা ফিরিয়ে দিতে পারে তার হাসি—রক্ষা করতে পারে একটি নিষ্পাপ জীবন।