প্রিন্ট এর তারিখঃ Oct 6, 2025 ইং || প্রকাশের তারিখঃ Oct 3, 2025 ইং
খুলনায় চায়ের দোকানির বটি হামলা
খুলনায় চায়ের দোকানির বটি হামলা প্রতিবেশী বিরোধ নাকি গভীর সামাজিক সংকটের প্রতিচ্ছবি?
স্টাফ রিপোর্টার
তথ্য বলছে, খুলনার দৌলতপুর থানার মহেশ্বরপাশা নয়াপাড়া এলাকায় শুক্রবার (৩ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে এক ভয়াবহ ঘটনায় প্রতিবেশীর হাতে রক্তাক্ত হলেন শরীফুল ইসলাম বাবু (৫০)। স্থানীয় সূত্র জানায়, বাবুকে ধারালো বটি দিয়ে কুপিয়ে জখম করেন একই এলাকার ফিরোজ নামের এক চা বিক্রেতা। গুরুতর আহত বাবুকে স্থানীয়রা উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন।
ওসি (তদন্ত) জাহিদুল ইসলাম জানান, ফিরোজ বাকপ্রতিবন্ধী স্বভাবের এবং এলাকায় ছোট একটি চায়ের দোকান চালান। তিনি দীর্ঘদিন ধরে নানা মানসিক চাপ ও প্রতিবেশীদের সঙ্গে বিবাদে জড়িত ছিলেন।
সূত্রের দাবি, কয়েক দিন আগে বাবু ফিরোজের স্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে "উস্কানিমূলক মন্তব্য" করেছিলেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে স্ত্রী সন্তানকে নিয়ে বাড়ি ছেড়ে চলে যান ফিরোজের কাছ থেকে। একইসঙ্গে বাবুর বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে—তিনি ফিরোজের দোকান থেকে প্রায়ই চা খেয়ে টাকা পরিশোধ করতেন না।
প্রশ্ন উঠছে, শুধুমাত্র পারিবারিক মানসিক আঘাত আর দোকানের বকেয়া টাকার জন্যই কি এ ধরনের ভয়াবহ হামলা ঘটতে পারে? নাকি এর পেছনে রয়েছে আরও গভীর সামাজিক অসহিষ্ণুতা ও ব্যক্তিগত প্রতিহিংসার জটিল সম্পর্ক? মানসিক প্রতিবন্ধকতা ও হতাশার সুযোগে কি ফিরোজ অপরাধের দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে?
তথ্য অনুযায়ী, হামলার পর পালিয়ে যাওয়ার বদলে ফিরোজ নিজেই থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করেন। বর্তমানে তিনি পুলিশের হেফাজতে রয়েছেন। স্থানীয়দের একাংশ বলছেন, ফিরোজকে বহুবার উত্যক্ত করা হতো, তবে আইনের আশ্রয় নেওয়ার পরিবর্তে তিনি নিজেই ভয়ঙ্কর পথে হাঁটেন।
স্থানীয় কয়েকজনের অভিযোগ, এ ধরনের ছোটখাটো বিবাদ বা অপমানের ঘটনাই গ্রামে বড় সহিংসতায় রূপ নিচ্ছে। সমাজবিজ্ঞানীরা বলছেন, গ্রামীণ এলাকায় সহিংসতা বৃদ্ধি পাচ্ছে মূলত সামাজিক যোগাযোগ ও বিরোধ নিষ্পত্তির দুর্বল প্রক্রিয়ার কারণে।
তদন্ত কর্মকর্তারা বলছেন, বিষয়টি ‘ব্যক্তিগত বিরোধ ও ক্ষোভের জের’। তবে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে—একটি উস্কানিমূলক বাক্য বা সামান্য বকেয়া টাকা যদি এত বড় রক্তাক্ত হামলার জন্ম দেয়, তবে সমাজের ভিত কোথায় দাঁড়িয়ে আছে?
© সকল কিছুর স্বত্বাধিকারঃ উদয়ের পথে