প্রিন্ট এর তারিখঃ Oct 6, 2025 ইং || প্রকাশের তারিখঃ Oct 3, 2025 ইং
গোপালগঞ্জে ১০ দিনের কন্যাশিশুকে পানিতে ফেলে হত্যা: প্রশ্নের মুখে মায়ের অস্বাভাবিক আচরণ
গোপালগঞ্জে ১০ দিনের কন্যাশিশুকে পানিতে ফেলে হত্যা: প্রশ্নের মুখে মায়ের অস্বাভাবিক আচরণ
গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি
তথ্য বলছে, গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় এক হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটেছে। মাত্র ১০ দিন বয়সী কন্যা সন্তানকে পানিতে ফেলে হত্যার অভিযোগ উঠেছে রিয়া বিশ্বাস (১৭) নামের এক তরুণী মায়ের বিরুদ্ধে। পরে তিনি নিজেও আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) রাতে উপজেলার বর্ণি ইউনিয়নের মধ্যপাড়া খেয়াঘাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্ত রিয়া বিশ্বাস টুঙ্গিপাড়া উপজেলার গোপালপুর উত্তরপাড়ার বাসিন্দা হরিচাদ বিশ্বাসের স্ত্রী। বর্তমানে তিনি পুলিশ হেফাজতে রয়েছেন।
সূত্র জানায়, কন্যাশিশুর জন্মের পর থেকেই রিয়া বিশ্বাসের আচরণে অস্বাভাবিকতা লক্ষ্য করা যাচ্ছিল। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর তিনি সন্তানকে নিয়ে বাড়ি থেকে বের হন। পরে খেয়াঘাট এলাকায় গিয়ে শিশুটিকে পানিতে ফেলে দেন এবং নিজেও পানিতে ঝাঁপ দেন।
স্থানীয়রা জানান, “রিয়াকে পানিতে ভাসতে দেখে নৌকা নিয়ে উদ্ধার করি। তখন সে নিজেই স্বীকার করে যে, সন্তানকে পানিতে ফেলে দিয়েছে।
তথ্য বলছে, স্থানীয়দের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শিশুটির মৃতদেহ উদ্ধার করে। এলাকাবাসী হতবাক হয়ে যায় এ নির্মম ঘটনায়। একজন স্থানীয় নারী বলেন,
“সন্তান জন্মের পর থেকেই ওর মধ্যে অস্বাভাবিক আচরণ দেখা যাচ্ছিল। কিন্তু এমন অমানবিক কাজ করবে, তা কেউ ভাবেনি।
টুঙ্গিপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জাহিদুল ইসলাম জাহাঙ্গীর বলেন,মা রিয়া বিশ্বাস নিজের ১০ দিনের শিশুকে পানিতে ফেলে হত্যার পর আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। স্থানীয়রা তাকে জীবিত উদ্ধার করেছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়েছে। কেন এমন কাজ করেছে তা এখনো পরিষ্কার নয়। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।
মাত্র ১৭ বছরের এক মায়ের এমন ভয়াবহ সিদ্ধান্তের নেপথ্যে কী ছিল?
এটি কি প্রসব-পরবর্তী মানসিক চাপ (Postpartum Depression) এর লক্ষণ?নাকি সামাজিক ও পারিবারিক চাপ তাকে এমন চরমপন্থায় ঠেলে দিয়েছে?
গ্রামীণ সমাজে নারীর মানসিক স্বাস্থ্য কতটা গুরুত্ব পাচ্ছে?
তথ্য বলছে, শিশুহত্যা ও আত্মহত্যার চেষ্টার এই ঘটনাটি শুধু একটি পরিবারকেই নয়, পুরো সমাজকেই নাড়া দিয়েছে। সূত্র জানায়, পুলিশ আইনি প্রক্রিয়া এগিয়ে নিচ্ছে, তবে সঠিক কারণ নির্ণয়ে সময় লাগবে।
প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে—এই ঘটনার পেছনে মানসিক স্বাস্থ্যজনিত সংকট না সামাজিক চাপে ভেঙে পড়া একটি কিশোরী মায়ের করুণ বাস্তবতা?
© সকল কিছুর স্বত্বাধিকারঃ উদয়ের পথে